বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে বিএনপির ভেতর ও বাইরের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
এমন এক সময়ে, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান সম্প্রতি এক অনলাইন টকশোতে দলটির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য করেছেন।
টকশোতে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “তারেক রহমান হবেন প্রধানমন্ত্রী, আর দেশমাতা খালেদা জিয়া হবেন রাষ্ট্রপতি।”
বেগম জিয়ার দেশে ফেরাকে ঘিরে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ফিরে আসা তো স্বাভাবিক। উনি তো গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। এখন দেশে ফিরেছেন মানেই রাজনীতির হাল ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।”
বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব প্রসঙ্গে আখতারুজ্জামান বলেন, “দেশমাতা খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে, তাতে তিনি রাষ্ট্রপতি হবেন। আর তারেক রহমান হবেন প্রধানমন্ত্রী। এখানে তো কোনো জটিল অঙ্ক নেই। এটা রকেট সায়েন্স না।”
আখতারুজ্জামান বেগম জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে বলেন, “দেশমাতা খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়েছিলেন। অনেক অনেক কষ্টের বিনিময়ে, অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার হয়ে, মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত থেকে দুই-তিনবার তো প্রায় মারা যাচ্ছিলেনই। বিদেশে চিকিৎসকদের দ্বারা চিকিৎসা করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা তাঁর চূড়ান্ততম প্রতিহিংসা কাকে বলে, কী প্রকার, সেটা দেশমাতা খালেদার উপর দেখিয়েছেন।”
আখতারুজ্জামান জানান, তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করে বেগম জিয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন। “নিজের দলের অস্তিত্ব বিসর্জন দিয়েও দেখা করে অনুরোধ করেছিলাম। তাঁর সঙ্গে লাস্ট কথা হয়েছিল ১৩ই জুলাই। তখন বলেছিলাম, আপনি আর কত প্রতিশোধ নিবেন? এবার ছেড়ে দেন। কিন্তু উনি (শেখ হাসিনা) শুনলেন না।”
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার ওপর যে অবিচার হয়েছে, যে নির্মমতা করা হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। শেখ হাসিনার এটা করা উচিত হয়নি। তিনি এই কাজের মাসুল দিচ্ছেন।”
তিনি আরও বলেন, “মানুষ ১০০০টা মার্ডার করলেও একবার ফাঁসি হয়, একটা মার্ডার করলেও একবার ফাঁসি হয়। অপরাধ বেশি করা লাগে না। শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছেন, তার পরিণতি তাঁকে পেতেই হবে।”
খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করে আখতারুজ্জামান বলেন, “আজকে মাশাল্লাহ যা দেখলাম, স্বাস্থ্য ভালো, শরীর ভালো। আপা দেশের হাল ধরার চেষ্টা করবেনই।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা এবং দলীয় নেতাদের এমন মন্তব্য বিএনপির রাজনীতিতে নতুন গতিবিধি তৈরি করতে পারে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ