ওমান, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শংকর সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতাদের “অতিমাত্রায় হাস্যকর” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এই মন্তব্য করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৌহিদ হাসানের সঙ্গে ওমানে এক বৈঠকের পর, যেখানে দুই দেশের সম্পর্কের বর্তমান অবস্থান নিয়ে আলোচনা হয়।
জয়শংকর অভিযোগ করেন, “যদি প্রতিদিন বাংলাদেশের সরকার থেকে কেউ উঠে এসে ভারতকে সবকিছুর জন্য দায়ী করে, তা সত্যিই হাস্যকর। আপনি একদিকে বলছেন ‘আমরা ভালো সম্পর্ক চাই’, কিন্তু অন্যদিকে আপনি প্রতিদিন সকালে উঠে ভারতকে দায়ী করছেন। এটা একটা সিদ্ধান্ত যা তাদের নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং মুক্তি বাহিনীর ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতবিরোধী বক্তব্য আসায় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সংখ্যালঘুদের ওপর যে আক্রমণগুলো হচ্ছে, তা আমাদের জন্য খুব উদ্বেগজনক। এটা আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। আমরা এই বিষয়ে সরব হবো, এবং ইতোমধ্যেই হয়ে গেছি।”
ভারত ইতিপূর্বে একাধিকবার বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষত, ২০২৪ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লিতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে এই হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং তার শাসনবিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র হয়।
জয়শংকর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, “ভারত স্পষ্টভাবে চেয়েছে যে পরিস্থিতি শান্ত হোক, কিন্তু আমরা তাদের কাছ থেকে ভারতের প্রতি এই ধরনের শত্রুতামূলক বার্তা আর সহ্য করতে পারি না।”
এটি প্রথমবার নয়, যখন জয়শংকর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করলেন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হাসানের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এটি ছিল দুই দেশের মধ্যে এক বছরের মধ্যে প্রথম উচ্চ-স্তরের আলোচনা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেবে, তা ভবিষ্যতই বলে দেবে। তবে স্পষ্টতই, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।
তথ্য সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস