একদিকে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য সহায়তা কমানোর ঘোষণা, অন্যদিকে পাকিস্তানের জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন পদক্ষেপ নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানের জন্য ৩৯৭ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪০ কোটি ডলার) অনুদান বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এই অর্থ পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, পাকিস্তানের সন্ত্রাস দমন কার্যক্রমে সহায়তা করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরই এই ঘোষণা আসায় দিল্লিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, মোদি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১৫ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি করলেও দেশটি কোনো বড় আর্থিক বা কৌশলগত সুবিধা পায়নি। তার বদলে পাকিস্তান বিশাল অঙ্কের অনুদান পাচ্ছে, যা ভারতের জন্য কূটনৈতিকভাবে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে নরেন্দ্র মোদির কূটনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখছে ভারতের বিরোধী দলগুলো। তাদের অভিযোগ, মোদি সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে কোটি কোটি ডলারের সামরিক প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ পর্যন্ত শুধু ব্যায়বহুল এফ-৩৫ চুক্তি করেই ফিরেছেন। বিরোধীরা এই চুক্তিকে ভারতের জন্য ‘সাদা হাতি’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং মনে করছে, এটি অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অন্যদিকে, পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে যে পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৪৫ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি পাকিস্তানকে এফ-১৬ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য নতুন অস্ত্র সরবরাহের বিষয়েও আলোচনা চলছে। এতে ভারতের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং নয়াদিল্লি কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। পাকিস্তানের সামরিক শক্তি আরও বাড়ানোর এই উদ্যোগ ভারতের জন্য একটি কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। ভারতের বিরোধী দলগুলো একে মোদি সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছে এবং কঠোর সমালোচনা শুরু করেছে।
অন্যদিকে, ইউএসএইড (USAID) এর মাধ্যমে মাত্র ২১ মিলিয়ন ডলার ভারতকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্প কড়া সমালোচনা করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ওপর নতুন চাপ তৈরি করতে পারে।
এদিকে, পাকিস্তান এই অনুদান পেয়ে সামরিক শক্তি আরও সুসংহত করার সুযোগ পাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ