ঈদের পরদিন একদিনের সফরে রাজবাড়ী জেলা পরিদর্শনে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একাধিক গ্রাম পরিদর্শন করে তিনি স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন। কোনো মঞ্চ, মাইক বা আনুষ্ঠানিকতার তোয়াক্কা না করেই তিনি মানুষের উঠোনে, গাছতলায় কিংবা টিনের ছাউনির নিচে বসে শুনেছেন মানুষের জীবনের বাস্তব গল্প।
স্থানীয় জনগণ তাদের নিত্যদিনের সমস্যাগুলোর কথা অকপটে তুলে ধরেন তার সামনে। এসব আলোচনার মধ্যেই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা শোনান পারভীন নামের এক বিধবা নারী। তিনি বলেন, মাত্র দুই মাস আগে স্বামীকে হারানোর পর গ্রামের ভাঙা ও সরু রাস্তার কারণে গাড়িতে মরদেহ আনতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ভ্যানে করে মরদেহ নিয়ে যেতে হয় তাকে। এই অভিজ্ঞতার কথা বলার সময় তার কণ্ঠে বেদনা ও অপমানবোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তাসনিম জারা এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এই কথাগুলো ভুলে থাকা যায় না। আমি রাতে ঘুমাতে গেলেও পারভীন আপার অসহায় চোখ আমার চোখে ভাসে।” তিনি আরও বলেন, “দেশ থেকে হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে, কিন্তু সেদিন আমি দেখেছি কার কাছ থেকে সেই টাকা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পারভীন আপার মতো মানুষের কাছ থেকে, যারা শুধু একটু রাস্তা, একটু সম্মান চান।”
দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “তারা কখনো এসব মানুষের উঠানে বসে গল্প শোনেনি। শুনলে হয়তো তাদেরও রাতে ঘুম হতো না।”
তাসনিম জারার এই সফর ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি তার ফেসবুকে তাসনিম জারার স্ট্যাটাসটি শেয়ার করে লিখেছেন, “আমার অনেক স্বপ্নের মধ্যে একটি ছিল, জারা আপুর মতো মানুষরা এই দেশের রাজনীতিতে আসবেন।”
সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও রাজনীতিকে মানুষের কণ্ঠস্বর করার এই উদ্যোগ রাজবাড়ীর মানুষের মাঝে আশার আলো জাগিয়েছে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ